উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য আমাদের প্রচেষ্টার কমতি নেই। চাকুরীর দাসত্ব থেকে নিজেকে মুক্তি দিতে চাই আমরা। কিন্তু নানা সীমাবদ্ধতার কারনে বের হয়ে আসা হয় না এ যাতাকল থেকে। চাই ঝুঁকি নিতে সাহসী হতে গিয়েও হতে পারি না। চাকুরীকে নিরাপত্তা ভেবে সেই চাকুরীর পরাধীনতার মধ্যে স্বাধীনতা খুঁজতে হয়। অনিচ্ছায় নির্বাসনে যাওয়ার মত করে প্রতিদিন অফিস যেতে হয় বাসে ঝুলে ঝুলে।

যারা হবেন উদোক্তা তাদের সর্বপ্রথম মনের মধ্যে জিদ থাকতে হবে। কখনও কখনও জয় নিশ্চিত জেনেও শোচনীয় পরাজয় বরন করতে হয়। আবার নিশ্চিত হারও জয়ে পরিনত হয়ে যায়। আপনার মনের মধ্যে একটি জিদ পুষে রাখুন যে কোন মূল্যে আপনাকে জয়ী হতেই হবে। তবে সবার প্রথমে আপনাকে যে কাজটি করতে হবে তা হল একটি বড় লক্ষ নির্ধারন করা। আর লক্ষকে তাড়া করতে থাকতে হবে আত্মবিশ্বামের দম।

আত্মবিশ্বাস রাখুন নিজের প্রতি। আপনার মধ্যে প্রচুর সম্ভাবনা আছে। আপনি শ্রেষ্ঠ আপনার কাজ দ্বারা এই একটি কথা নিজেকে বিশ্বাস করান। আপনি অন্য সবার থেকে আলাদা। আপনি সেই কাজটি করতে প্রস্তুত যেখানে আপনার আগেও অনেকে ব্যর্থ হয়েছে। আপনি বার বার ব্যর্থ হলেও সেই কাজের সফলতা পাওয়ার আগ পর্যন্ত লেগে থাকতে রাজি।

কোন কিছু পেতেই হবে এবং তা সৎপথে। কেউ আপনার সহযোগী হিসেবে না থাকলেও আল্লাহ আপনার সাথে আছে এটা বিশ্বাস করুন। সৎপথে যে কোন ভাল কিছু পেতে যখন আপনি মনস্থির করবেন তখন সেই কাজটির জন্য সৃষ্টিকর্তা স্বয়ং আপনার সহযোগী হয়ে যাবে। কোন কিছুর জন্য সুযোগ থাকে না। সুযোগ তৈরী করে নিতে হয়। সফল হবার রাস্তা আপনাকে কেউ দেখিয়ে দিতে পারবে কিন্তু আপনাকে সেই পথের শেষে পৌঁছে দিতে পারবে না। তাহলে কারও জন্য অপেক্ষা নয়।

কে কি বলল তাতে আপনার কিছু যায় আসে না। পৃথিবীর মানুষকে কয়েক বছরের জন্য ভুলে নিজের কাজে মন দিন। পৃথিবীর মানুষগুলো আপনাকে খুঁজে বের করে নিবে আপনার কাজের দ্বারা। শেষ দেখার জিদ নিয়েই নামুন কাজে। মাঝ নদীতে নৌকা থেকে নেমে পড়লে পাড়ে এসে পৌছাতে পারবেন কিনা তা অনিশ্চিত। কিন্তু মাঝ নদীতে তুফানে ছেঁড়া পালের নৌকা ডুবে গেলেও যদি মনের মধ্যে জিদ থাকে তবে পাড়ে ঠিকই পৌঁছানোর যেকোন একটা ব্যবস্থা হবেই।

ভাল কোন কিছুর জন্য জিদ ধরুন। মন্দ কোন কিছুর জন্য নয়। ঝুঁকি নেওয়ার মত সাহস তৈরী করুন। সবাই ঝুঁকি নেওয়ার মত সাহস দেখাতে পারে না। যারা ঝুঁকি নেওয়ার মত সাহস দেখাতে ব্যর্থ হয় তারা গোলামীর মধ্যে স্বাধীনতা খুঁজে ফিরে। সেটাকেই সম্মান আর নিরাপত্তা মনে করে আর বলে বেড়ায় সবাই যদি উদ্যোক্তা হয় তাহলে চাকরী করবে কে?

বলি উন্নত দেশের বেশীর ভাগ মানুষ উদ্যোক্তা তাদের চাকুরী কারা করে? প্রয়োজনে অন্যের দেশ থেকে শ্রমশক্তি আমদানী করবেন। কে আপনাকে বাধা দেয়? আমাদের দেশে বহু উদ্যেক্তা আছে যারা তার প্রতিষ্ঠানে বিদেশের শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে রেখেছে। এমনকি আপনি যার চাকুরী করছেন সেও দেশের বাইরের দুই চার জনকে আপনার মত চাকুরী দিয়ে রেখেছেন।

জেতার জন্য হলেও একবার আকাশের দিকে তাকান। বিশালতার আকাশে আপনি মুক্ত পাখি হয়ে উড়বেন নাকি বন্দী পখির মত খাঁচায় মধ্যে দাপাদাপি করবেন সেটা ব্যক্তিগত। তবে আপনার উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার জন্য অপেক্ষায় সবাই। সুযোগ কেউ তৈরী করে না দিলেও আপনি অন্যদের পথ দেখানোর জন্য হলেও নিজের সঙ্গে নিজে জিদ ধরুন। পথ দেখান আপনি, কারো জন্য হলেও সামনে চলুন।